আপনার শিশু কি মায়োপিয়ায় আক্রান্ত?
অনেকের কাছে চশমা ফ্যাশনের অংশ হলেও, বেশিরভাগ মানুষ, বিশেষ করে শিশুদের জন্য এটি বেশ বাড়তি ঝামেলাময় একটি ব্যাপার। বেশিরভাগ শিশু মায়োপিয়ার জন্য চশমা পড়তে বাধ্য হয়। মায়োপিয়ার ক্ষেত্রে শিশুরা দূরের দৃশ্য দেখতে সমস্যাবধ করে। সচেতন থাকলে এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করলে এই মায়োপিয়াকে রোধ করা বা দমিয়ে রাখা সম্ভব হয়। আপনার শিশুর সুস্থ দৃষ্টিশক্তির জন্যই চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক এই মায়োপিয়া সম্পর্কে-
মায়োপিয়া কেন হয়?
বেশ কয়েকটি কারণে একজন শিশু মায়োপিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। কারণগুলো হলো-
১। জীনগত সমস্যা
বংশে কারও মায়োপিয়ার সমস্যা থেকে থাকলে সেটি জিনের মাধ্যমে শিশুর মধ্যে পরিবাহিত হতে পারে। তবে অসুস্থতার প্রকাশ কখনো ছোটবেলায়ও হতে পারে, আবার কখনো বড় হওয়ার পরেও দেখা দিতে পারে।
২। প্রযুক্তির ব্যবহার
প্রযুক্তির নানা পণ্য আমরা ব্যবহার করি। এর মধ্যে রয়েছে ল্যাপটপ আর স্মার্টফোনও। এই জিনিসগুলো চোখের খুব কাছে এনে ব্যবহার করলে মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে।
৩। বাইরে না যাওয়া
গবেষণায় দেখা যায় যে, যেসব শিশু দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় ঘরের বাইরে গিয়ে সময় কাটায়, তাদের মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। মূলত, বাইরের প্রাকৃতিক আলো ও মায়োপিয়া কমে যাওয়ার মধ্যে কোনো সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়।
আমার সন্তানের মায়োপিয়া থাকলে কী করবো?
অনেকেই ভেবে থাকেন যে, মায়োপিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চশমা কম পরালে সেক্ষেত্রে এই সমস্যা চলে যায়। এই কথাটি সত্যি নয়। এমনকি, কখনো চশমা না পড়ায় মায়োপিয়ার অবস্থা আরো বেশি বেড়ে যায়। আপনার সন্তানের মায়োপিয়া থাকলে তাকে স্বাস্থ্যসম্মত জীবন যাপন করতে, খাবার গ্রহণ করতে এবং নির্দিষ্ট সময় চশমা পরিধান করতে বলুন। তাকে বাইরে খেলতে যেতেও উৎসাহ প্রদান করুন।
মায়োপিয়া ঠিক করার কোনো উপায় আছে?
মায়োপিয়ার ক্ষেত্রে দুইটি উপায় আপনি অবলম্বন করতে পারেন। সেগুলো হলো-
১। এট্রোপাইন
এই ওষুধের মাধ্যমে মায়োপিয়া একেবারে ঠিক হয়ে যাবে না। তবে কিছুটা হলেও এটি চোখের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়মতো আই ড্রপটি ব্যবহার করুন।
২। ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা
মায়োপিয়াকে পুরোপুরি দূর করার কোনো পদ্ধতি যেহেতু নেই, তাই আপনার শিশুকে ভালো কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করুন। বিশেষ করে চোখের জন্য ভালো, এমন অভ্যাসগুলো তার মধ্যে গড়ে তুলুন।
ল্যাসিকের মাধ্যমে কি এই সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়?
আমরা অনেকেই ভেবে থাকি যে, চোখের যেকোনো সমস্যা ল্যাসিক সবচাইতে ভালো এবং সেরা উপায়। কথাটি সত্যি। তবে ল্যাসিক শুধু কর্ণিয়াকে নতুন আকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আলো সঠিকভাবে চোখের ভেতরে পড়তে সাহায্য করে। মায়োপিয়া খুব বেশি বেড়ে গেলে সেক্ষেত্রে ল্যাসিক ব্যবহার করেও খুব একটা ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না।
তবে, ল্যাসিক হোক বা সাধারণ অভ্যাস, মায়োপিয়াকে প্রতিরোধ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি ব্যাপার। নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করা হলে পরবর্তীতে এটি আরও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই, আপনার শিশুর যত্ন নিন, তার চোখের যত্ন নিন।