ভ্যাটের হার হবে তিনটি
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, নতুন আইনে মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) একক হার ১৫ শতাংশ থাকছে না। এর পরিবর্তে তিনটি হার হবে। সর্বোচ্চ হার ১০ শতাংশ। অন্য দুটি হার হবে যথাক্রমে ৫ ও ৭ শতাংশ। তবে এটি প্রাথমিক প্রস্তাব। ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ভ্যাটের নতুন হার বা রেট চূড়ান্ত করে আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন আইন কার্যকর করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে সাংবাদিকের এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। আগামী বাজেটে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি। তিন বছরে পর্যায়ক্রমে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।
অর্থমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে সমীক্ষা চালানো হবে। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। খেলাপি ঋণ আদায়ে একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি নিয়োগের কথা বলেন মন্ত্রী।
গত ১০ মার্চ থেকে প্রাক-বাজেট আলোচনা শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এর ধারাবাহিকতায় অর্থ, পরিকল্পনা ও সরকারি হিসাব-সংক্রান্ত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনা করা হয় বৃহস্পতিবার। আগামী জুনে প্রথমবারের মতো ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংবাদ ব্রিফিংয়ে মুস্তফা কামালের পাশে অর্থ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগামী বাজেটে উন্নয়ন প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন ও দুর্নীতি কমানোর পরামর্শ দেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিরা। তারা বলেছেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্ব হওয়ার কারণে প্রকল্পের খরচ দুই-তিনগুণ বেড়ে যায়।
সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী জানান, আসন্ন বাজেটে রফতানিকে উৎসাহিত করতে নানা পদক্ষেপ থাকবে। এ ছাড়া কৃষকদের সুরক্ষায় শস্যবীমা এবং গরিবের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হেলথ ইন্স্যুরেন্স চালুর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে দুই বছর আগে নতুন ভ্যাট আইন স্থগিত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যা আগামী ১ জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা। এই আইনে পণ্য ও সেবার সব ক্ষেত্রে একক বা সিঙ্গেল রেট ১৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের কথা রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি নিয়ে অসন্তোষ আছে সাংসদদের। এটা নিয়ে অনেকেই জোরালো দাবি জানান। এ দাবি মানা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এমনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে- দেখা যায় ৪০ জন শিক্ষক, ছাত্র আছেন ৩২ জন। এগুলো দেখতে হবে। বস্তুনিষ্ঠ বিচার-বিশ্লেষণ করতে হবে। তার পর যোগ্য প্রতিষ্ঠানকে এমপিওর আওতায় আনা হবে।
মুস্তফা কামাল জানান, প্রধানমন্ত্রী তাকে নির্দেশ দিয়েছেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যে সব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো বাজেটে রাখতে হবে। রফতানি খাতের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী জানান, রফতানিতে প্রণোদনা নিয়ে কিছু অসঙ্গতি আছে। কোনো খাতে বেশি আছে, আবার কোনো খাতে কম আছে। এগুলো যৌক্তিক করা হবে। উদ্দেশ্য রফতানি বাড়ানো।
মুস্তফা কামাল জানান, নিয়মিত করদাতাদের ওপর চাপ কমাতে যোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনা হবে। এ জন্য কর হার কমিয়ে আওতা বাড়ানো হবে।
তিনি জানান, আমাদের দেশে করপোরেট কর হার বেশি। এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এমন কিছু করা হবে না, যাতে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কারণ, দেশে বিনিয়োগের চাহিদা বাড়ছে। এই চাহিদা পূরণে আরও বেশি রাজস্ব আহরণ করতে হবে। এ জন্য আগামী বাজেটে রাজস্ব আদায়ে বেশি নজর দেওয়া হবে।
প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন সক্রিয় অনলাইন প্রতিনিধি। আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা, অপরাধ, সংবাদ নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।