বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাট গড়ে দেওয়ার ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকার বস্তিবাসীর জন্য সরকারিভাবে ফ্ল্যাট নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমি জানি ঢাকায় বস্তিবাসী রয়েছে। এই বস্তিবাসীরা মানবেতর জীবন-যাপন করেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজকে যে অবস্থায় তারা বসবাস করে সে অবস্থা থাকবে না। তারা যাতে ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাকতে পারে বহুতল ভবন করে ফ্ল্যাট নির্মাণ করে, আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের জন্য আমরা সেই ফ্ল্যাট ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেব। অন্তত সেই ফ্ল্যাটগুলি কেউ যদি দৈনিক হারে ভাড়া দিতে চায় দৈনিক হারে ভাড়া দিতে পারবে, সাপ্তাহিক হারে ভাড়া দিতে পারবে, মাসিক হারে ভাড়া দিতে পারবে, যে যেভাবে চাইবে সেভাবে ব্যবস্থা করব।’
শুক্রবার (২১ডিসেম্বর) বিকেলে গুলশানের ইয়ুথ ক্লাব মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহর সভাপতিত্ব বেলা পৌনে ৩টায় জনসভা শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী আসেন পৌনে ৪টার দিকে। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা ইয়ুথ ক্লাব মাঠে জড়ো হন। তারা নৌকার প্রতিকৃতি নিয়ে, নেচে-গেয়ে উল্লাস করেন। প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানার হাতেও বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে প্রকল্প নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আগামীতে সরকারে আসতে পারলে এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করে প্রত্যেকটা মানুষ স্বল্প আয়ের মানুষ, নিম্ন আয়ের মানুষ যেন সুন্দরভাবে বসবাস করতে পারে সেব্যবস্থা আমরা করে দেব।
ঢাকাবাসীর বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমরা পানির সমস্যা সমাধান করেছি। এখন আর কোন পানির সমস্যা নেই। তবে আমি অনুরোধ করব এই এক লিটার পানি পরিশোধন করতে অনেক টাকা খরচ হয়, তাই পানির যাতে অপচয় না হয় সেদিকে আপনাদের দৃষ্টি দিতে হবে। আগে যেখানে ৭/৮ ঘণ্টা লোডশেডিং, বিদ্যুৎ এই আসে এই যায়, এমন একটা অবস্থা ছিল । আজকে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাংলাদেশ অর্জন করেছে। আল্লহর রহমতে কোন লোড শেডিং নাই। তবে এক্ষেত্রে অনুরোধ করব বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে খরচ হয় সেখানে আমরা ভর্তুকি দেই। খরচের টাকাও আপনাদের কাছ থেকে নেই না। কিন্তু আপনারা দেখবেন বিদ্যুতের যেন অপচয় না হয়। সকলে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হবেন।’
বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাজধানীর মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করতে আমরা মেট্রোরেল করছি। আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে পাতাল রেল চালু করব। ইতোমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য আমরা সারা ঢাকা শহরে সার্ভে শুরু করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকাকে যানজটমুক্ত করতে মেট্রো রেল করা হচ্ছে। পাতাল রেল স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মানুষের নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের জন্য ইউনিয়নগুলোকে সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা সিটিকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকার আশপাশে ছোট ছোট শহর গড়ে তোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক-বীমা বেসরকারি করণ করা হয়েছে। ১০০টি শিল্পাঞ্চল তৈরি করা হচ্ছে, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সম্প্রসারিত হয়। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। ৪৪টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৩৩টি চালু আছে। সেগুলোতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ১৬০০ থেকে ৮ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ২০২০ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী পালন করব। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আমি আপনাদের কাছে এই নিবেদন করব, ২০২০-২১ থেকে আমরা মুজিব বর্ষ ঘোষণা দিয়েছি। আমরা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চাই। সেই সুবর্ণজয়ন্তী আমরা তখনই পালন করতে পারব যখন নৌকা মার্কায় ভোট পেয়ে আমরা আবারো সরকার গঠন করে জনগণের সেবা করতে পারব তখনি।
সভায় শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে রাজধানীর বিভিন্ন আসনে নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।
সভায় আরো বক্তব্য দেন শেখ সেলিম,আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাহারা খাতুন, ফারুক, আতিকুল ইসলাম আতিক, সাঈদ খোকন, সাদেক খান, ওমর ফারুক চৌধুরী, ইলিয়াস আলী মোল্লা প্রমুখ।
প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন সক্রিয় অনলাইন প্রতিনিধি। আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা, অপরাধ, সংবাদ নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।