ফ্রান্সে ভয়ংকর হচ্ছে হলুদ বিক্ষোভ
সহিংসতা থামাতে গণগ্রেফতার, টিয়ারগ্যাস-মরিচের গুঁড়া * আন্দোলন ছড়িয়েছে বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডসে
ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের ওপর বাড়তি করারোপের প্রতিবাদে আবারও ফুঁসে উঠেছেন ইয়েলো ভেস্ট বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ দমনে সরকার আগে থেকেই প্রায় ৯০ হাজার নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করে। বিক্ষোভকারীরাও বড় প্রতিবাদ র্যালির ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন।
রাজধানী প্যারিসসহ গুরুত্বপূর্ণ শহরের প্রায় ৩১ হাজার হলুদ বিক্ষোভকারী রাজপথে নামেন। বিক্ষোভ চলাকালে প্রতিবাদকারীদের ওপর টিয়ারগ্যাস, মরিচের গুঁড়া ও জলকামান ছোড়ে পুলিশ। সহিংসতা দমনে দেশজুড়ে অন্তত আট শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
টানা চার সপ্তাহ ধরে চলা এ বিক্ষোভ দিন দিন ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশ বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে।
বিবিসি জানায়, প্যারিসে মোতায়েন করা হয়েছে আট হাজার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ১২টি সাঁজোয়া যান। এখানে প্রায় পাঁচ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়ে পুলিশি বেষ্টনীতে প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও মরিচের গুঁড়া ছুড়ে। পাল্টা ইট-পাথর ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার্দ ফিলিপ জানান, শুধু প্যারিস থেকেই পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আটককৃত সংখ্যা বেশি। জ্বালানি তেলের কর বাড়ানোর প্রতিবাদে ১৭ নভেম্বর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে বিক্ষোভ হয়ে আসছে।
ট্যাক্সি চালকদের হলুদ জ্যাকেট পরে প্রতিবাদে অংশ নেয়ায় এ আন্দোলনের নাম হয় ‘ইয়োলো ভেস্ট’ বা ‘হলুদ জ্যাকেট’ আন্দোলন। বিক্ষোভে এ পর্যন্ত চারজন নিহত হন।
এছাড়া দেশজুড়ে সহিংসতা ও লুটতরাজ এবং বেশ কয়েকটি স্থাপনা এবং ভাস্কর্যও ভাঙা হয়েছে। মঙ্গলবার সরকারের পক্ষ থেকে কর আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। তবে এরপরও বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
ফরাসি দৈনিক লা মন্ডির খবরে বলা হয়, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ব্যাগ তল্লাশি করেছে। তাদের হেলমেট ও চশমার মতো জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই পুরুষ, যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। সহিংসতার হুমকি দেয়ার পর বিক্ষোভ থেকে সরে গেছেন তুলনামূলকভাবে বয়স্করা।
ফ্রান্সের মতো বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে শনিবার বিক্ষোভ হয়েছে।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের বিক্ষোভ থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী চার্লস মাইকেলকে পদত্যাগের দাবি ওঠে। কয়েকশ’ বিক্ষোভকারী রাজপথে নামলে পুলিশ পথরোধ করে। সহিংস হওয়ার চেষ্টা করলে ৭০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নেদারল্যান্ডস সরকারও জ্বালানির ওপর করারোপের প্রস্তাব করেছে। এতে ফুঁসে ওঠে জনগণ।
শনিবার কয়েকশ’ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন।