ড. কামালের গাড়িবহরে হামলা
ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেরার পথে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন জাসদের আ স ম আবদুর রব, রেজা কিবরিয়া, বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছিলেন আবদুস সালাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমুখ।
ড. কামাল হোসেনের গাড়ি ছাড়াও আসম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, জগলুল হায়দার আফ্রিকের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে আসম আবদুর রবের গাড়ি চালককে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়।
হামলা সম্পর্কে ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা আ.স.ম. আবদুর রব বলেন, “হামলাকারীরা পিস্তল দিয়ে ফাঁকা গুলি করেছে কয়েকবার। আমাদের ঐক্য ফ্রন্টের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপরেও হামলা করা হয়েছে।”
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের এই শীর্ষ নেতা জানান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ থেকে ঐক্য ফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেনের গাড়ি বের হয়ে গেলেও অন্যান্য কয়েকজন নেতার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তিনি বলেন, এই হামলায় তাঁর নিজের গাড়ির চালকও আহত হয়েছেন।
মি. রব ঘটনার জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করেন।
ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিমুজ্জামান বিবিসিকে বলেন, “স্মৃতিসৌধের মূল বেদি থেকে গেটের বাইরে হইচই, দৌড়াদৌড়ি দেখে পুলিশ সেখানে যায়, কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা আর কাউকেই পেলাম না।”
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, “বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো শেষে বের হওয়ার সময় অনেক মানুষের জটলা দেখতে পাই। আমি আগে নিরাপদে বের হয়ে গেলেও পেছনে ড. কামাল হোসেন ও আ স ম রবের গাড়ি হামলার শিকার হয়। হামলায় আহত ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল ইসলাম জানান, ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৫০-৬০ জন ছেলে হঠাৎ বিএনপিসহ জাতীয় নেতাদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। অনেকের মাথা ফেটে গেছে। হামলায় ঢাকা-১৪ আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী এসএ সিদ্দিক সাজুও আহত হয়েছেন। এ বিষয়ে সাজুর বাসায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।”
গণফোরামের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা লতিফুল বারী হামিম প্রথম আলোকে বলেন, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবসহ গণফোরামের নেতৃবৃন্দ ছিলেন। তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসলামুল হকের সমর্থকেরা তাঁদের গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। কামাল হোসেনের গাড়ি আগে বের হয়। তাঁর পেছনের গাড়িতেই ছিলেন আ স ম আবদুর রব। হামলার ঘটনায় আ স ম আবদুর রবের গাড়ির চালক আহত হয়েছেন।
তিনি এ জন্য ছাত্রলীগ-যুবলীগকে দোষারোপ করেছেন।
লতিফুল বারী বলেন, হামলায় কামাল হোসেনের গাড়ি খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও বহরের পেছনে থাকা ঐক্যফ্রন্ট নেতা আ স ম আবদুর রব, জগলুল হায়দার আফ্রিক, ঢাকা-১৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী সিদ্দিক সাজুর গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ১০-১২ জন আহত হন।
ছবি তুলতে গিয়ে কয়েকজন ফটোসাংবাদিকও হামলার শিকার হন বলে জানান লতিফুল বারী। ছবি-বাংলা নিউজ
এ ঘটনা নিয়ে আজ বেলা তিনটায় ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয় পুরোনো পল্টনের জামান টাওয়ারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন ড. কামাল হোসেন।
প্রত্যদর্শীরা জানান, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধের প্রধান ফটকে ড. কামাল হোসের গাড়ি রাখা ছিল। তিনি যখন গাড়িতে বসতে যাচ্ছেন, তখন অতর্কিতে ওই গাড়িতে গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। আশপাশে যাঁরা তাঁর সঙ্গে হেঁটে আসছিলেন, তাঁদের মারধর করা হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন টিভি সাংবাদিক আহত হন।
প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন সক্রিয় অনলাইন প্রতিনিধি। আপনার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনা, অপরাধ, সংবাদ নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।