ভারতকে টপকে বিশ্বকাপে ফেবারিট যারা
বিশ্বকাপ এখনো খানিকটা দূরে। বছরের মাঝপথের মহারণের আগে মনোযোগ কেড়ে নেওয়ার জন্য আইপিএল তো আছেই। তবু বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনায় দোষ নেই। বিশেষ করে সাবেক ক্রিকেটাররা যেভাবে এখনই বিশ্বকাপ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণীতে নেমেছেন! সবার ভবিষ্যদ্বাণীতেই এবার একটি চমক আছে। বহুদিন পর ওয়ানডে বিশ্বকাপে সবার প্রথম পছন্দই ইংল্যান্ড। সাবেক ইংলিশ পেসার স্টিভ হার্মিসনেরও তাই।
স্বাগতিক দল হিসেবে এমনিতেই এগিয়ে থাকত ইংল্যান্ড। তবে ১৯৯৯ সালেও স্বাগতিক ছিল ইংল্যান্ড। তবু সেবার তাদের ফেবারিট ধরা হয়নি, সেবার সত্যিকারের ইংলিশ কন্ডিশনে খেলা হওয়ার পরও। ইদানীং আইসিসির অলিখিত নিয়মে বিশ্বকাপ বা আইসিসির অধীনে হওয়া টুর্নামেন্টে দেশগুলো নিজেদের দেশের চরিত্র অনুযায়ী নয়, প্রচুর রান হয় এমন উইকেট বানাতে বাধ্য হয়। তাই সত্যিকারের ইংলিশ কন্ডিশন, সুইং আর গতি দিয়ে ত্রাস সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবু ইংল্যান্ড এবার ফেবারিট।
এবং এই ফেবারিট তকমা তারা অর্জন করেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়া বিশাল ধাক্কা দিয়েছে ইংলিশদের। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের মতো ২০১৯ সালেও যেন স্বাগতিক হয়ে বাদপড়ার দুঃখ পেতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে নেমেছে তারা। বিশ্বকাপের পরই নিজেদের প্রথাগত দল নির্বাচন শুরু করেছে। স্বভাবগত আক্রমণাত্মক খেলোয়াড়দের ওয়ানডে দলে ডাকাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এরই ফল বিশ্বকাপের পর ৫৮ ম্যাচের ৪৩টি জিতেছে তারা। ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে এখন শীর্ষ দল তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সিরিজ ড্র করলেও বিশ্বকাপে তাই ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রাখছে সবাই।
র্যাঙ্কিংকে গুরুত্ব দিতে চাইলে এরপরই নাম আসে ভারতের। একে তো তারা দ্বিতীয় দল। তার ওপর অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে গিয়ে মাত্রই সিরিজ জিতে এসেছে তারা। দেশের মাটিতেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ২-০তে এগিয়ে আছে। কিন্তু নিজের সেরা দুই পছন্দ বেছে নিতে বিস্মিত করলেন হার্মিসন, ‘ভারতকে হিসাবের বাইরে রাখা যাবে না। বিশ্বের নানা প্রান্তে অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে তারা। কিন্তু আমার চোখে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়াই দুই ফেবারিট। গত কয়েক বছরে ইংল্যান্ড কেমন খেলছে দেখুন, বিশেষ করে ঘরের মাঠে। তবে যে-ই জিতুক, ওদের একটু ভাগ্য লাগবেই।’
ঘরের মাঠে ২০১৭ সালেও খেলেছিল ইংল্যান্ড। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা দলটি গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেমিফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরে বসেছিল তারা। এবারও যে তেমন কিছু হবে না, তার নিশ্চয়তা কী? হার্মিসনের ধারণা, সে হার থেকে শিক্ষা নিয়েছে ইংল্যান্ড, ‘কার্ডিফে পাকিস্তান যখন ইংল্যান্ডকে হারাল, উইকেট একটু ভিন্ন ছিল। ইংল্যান্ড হতভম্ব হয়ে গিয়েছিল। ওদের কোনো বিকল্প পরিকল্পনা ছিল না।’
‘আমার ধারণা, ওদের এখন বিকল্প পরিকল্পনা আছে। এখন যদি অমন পিচে আবার খেলতে হয়, দুই বছর আগের অত সহজে ইংল্যান্ড হারবে না। ওদের কোনো ধারণাই ছিল না, অসহায় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু আমার মনে হয় এবার অন্য কিছু হবে। এটা ভিন্ন দল এবং ওরা অনেক কিছু শিখেছে। এ কারণেই আমার চোখে এরা ফেবারিট। ওদের পরই অস্ট্রেলিয়া থাকবে।’ কারণ? প্যাট কামিন্স ও মিচেল স্টার্ক! নিজে ফাস্ট বোলার ছিলেন বলেই হয়তো অস্ট্রেলিয়া দলে দুই ফাস্ট বোলারের উপস্থিতিকে বড় করে দেখছেন হার্মিসন, ‘এই বোলিং আক্রমণ থামাতে আপনাকে বিশেষ কিছু করতে হবে। আমার মতে শেষ পর্যন্ত যে বোলিং আক্রমণ টানা ভালো করবে, তারাই জিতবে। এ কারণেই ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়া অন্য দলগুলোর চেয়ে এগিয়ে আছে। স্টার্ক, কামিন্স, রিচার্ডসন (ঝাই), স্টেনলেক (বিলি)—এদের সবার ভয়ংকর গতি আছে। এমন গতি দিয়ে যেকোনো দল ও ভালো খেলোয়াড়কে উড়িয়ে দেওয়া যায়।’
৩০ মে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ। ১৪ জুলাইয়ের ফাইনালের প্রতিপক্ষ দেখলেই বোঝা যাবে হার্মিসনের ধারণা সত্যি কি না!
প্রিয় পাঠক, আপনিও হতে পারেন আওয়ার বাংলা অনলাইনের একজন অনলাইন প্রতিনিধি। খেলাধুলা বিষয়ে যেকোন তথ্য, প্রতিবেদন, প্রশিক্ষণ, টিপস, আপনার প্রতিষ্ঠানের খেলা সংক্রান্ত অলোচনা নিয়ে লিখুন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ছবিসহ মেইল করুনঃ [email protected] এই ঠিকানায়। লেখা আপনার নামে প্রকাশ করা হবে।